গত ২২ জুলাই ২০১৯, শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চন্দ্রযান-2 উৎক্ষেপণ করা হয়।পরিকল্পনা মাফিক গত ৭ ই সেপ্টেম্বর চন্দ্রযান ২ এর ল্যান্ডার অর্থাৎ বিক্রম ল্যান্ডারের চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার কথা ছিল।কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে চাঁদে অবতরনের পূর্বেই ল্যান্ডারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।কিন্তু অরবিটারটি এখনও তার কাজ করে চলেছে এবং এর মাধ্যমে চাঁদ সম্পর্কিত অনেক তথ্য এবং চাঁদের অনেক ফটো পাওয়া গিয়েছে।এইজন্য চন্দ্রযান ২ অভিযানটিকে সম্পূর্ণ সফল বলা না হলেও প্রায় ৯৮% সফল বলে মনে করা হয়। 
vikram lander,vikram lander last update,vikram lander latest news,vikram lander discover

বিক্রম ল্যান্ডারের  নিখোঁজের পর থেকেই এই বিষয়ে সবার আরও বেশি কৌতুহল জন্মায়।ইসরোর বিজ্ঞানীরা কিছু সময়ের জন্য হতাশ হয়ে গেলেও তারা পুনরায় তাদের কাজ শুরু করেন এবং বিক্রম ল্যান্ডারের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেন।কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও বিক্রম ল্যান্ডারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।গত ২৬  সেপ্টেম্বর নাসার "লুনার রিকনিসেন্স অরবিটার"(এলআরও) বিক্রমের অবতরণস্থলের চারপাশের ছবি তুলেছিল।সেই ছবি বিশ্লেষণ করে বিক্রম ল্যান্ডার এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করে নাসাকে জানিয়েছিলেন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার সুব্রমনিয়াম।এরপর নাসা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে সুব্রমনিয়াম এর দাবিই ঠিক।
চেন্নাই,মাদুরাই এর বাসিন্দা  সুব্রমনিয়াম তিরুনেলবেল্লির সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক।বর্তমানে তিনি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করেন।এর পাশাপাশি তিনি রকেট এবং অন্যান্য প্রযুক্তি নিয়ে নিয়মিত ব্লগ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা পোস্ট করেন।এলআরও থেকে পাওয়া ছবি দেখার পর তিনি দিনে প্রায় ছয় থেকে সাত ঘণ্টা এ বিষয়ে সন্ধান শুরু করেন।তাঁর কথামতো,'যেখানে বিক্রমের অবতরণের কথা ছিল,তার দু'কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে খোঁজ করতে গিয়ে কতগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়।নাসা এবং ইসরোকে জানিয়েছিলাম।নাসা ইমেল করে জানিয়েছে সেটাই ঠিক'।
এ সম্পর্কে নাসার বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত।প্রথমে বিক্রম ল্যান্ডারটি চন্দ্রপৃষ্ঠে থেকে ৮৩৪ মিটার উঁচু একটি জায়গায় আছড়ে পড়েছিল।তারপর সেখান থেকে ৭৫০ মিটার উত্তর-পশ্চিমে এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করা হয়।কলকাতার "ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স"-এর অধিকর্তা সন্দীপ চক্রবর্তী বলেছেন,'চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কম,তাই চন্দ্রপৃষ্ঠে পড়ার পর ধ্বংসাবশেষগুলি বেশ কিছুটা উপরে উঠে পাঁচ-সাতশো মিটার দূরে ছিটকে পড়তে পারে।তিনি আরও বলেন,'অবতরণের সময় বিক্রমের আনুভূমিক গতির থেকেও উলম্ব গতি অনেক বেশি ছিল।
নাসা জানিয়েছে,'বিক্রম চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৩৪ মিটার উচ্চতায় ধাক্কা খেয়েছে'।কিন্তু ইসরোর তথ্য অনুযায়ী,'৩৩৪ মিটার উচ্চতা থেকেও বিক্রম সংকেত পাঠিয়েছে'।তাহলে কি ধাক্কা খাওয়ার পরেও বিক্রমের থেকে শেষবারের মতো সংকেত পাওয়া গিয়েছিল?এই রহস্যের এখনো কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।