ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোর কথা তো আমরা সবাই জানি। ইসরো কম খরচে অনেক বড় বড় মিশনে খুব সহজে প্রথম পদক্ষেপেই সফল হয়েছে। ১৪ ই জুলাই ইসরো
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান ৩ মহাকাশযান পাঠিয়েছিল, যা ২৩ শে আগস্ট সফল অবতরন
করে বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। এরফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান পাঠানোয় ভারত
প্রথম দেশ হয়ে গিয়েছে। আর এরজন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা, যা অনেক হলিউড
মুভির বাজেটের থেকেও কম। এছাড়া ২০২৩ সালের ২ রা সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৭৮ কোটি টাকায়
ইসরো সূর্যের উদ্দেশ্যে আদিত্য L1 মিশন পাঠিয়েছে।
ভবিষ্যতে ইসরো আরও অনেকগুলো মিশন লঞ্চ করার পরিকল্পনা করেছে, যার মধ্যে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ মিশন রয়েছে (5 important
future missions of ISRO)
সেই মিশনগুলোর নাম কি, বাজেট কত এবং কবে
লঞ্চ করা হবে, আজকে এইসব বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক,
নম্বর ৫, গগনযান মিশন (Gaganyaan Mission)
এই মিশন সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই জানি। এটি হবে প্রথম ভারতীয় মানব মিশন। এই মিশন ২০২২ সালেই উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা এবং অন্যান্য সমস্যার কারনে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই মিশনের ব্যাপারে ইসরো অনেক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে এবং তার সাথে মহাকাশচারীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হছে। মনে করা হছে, ২০২৫ বা ২০২৬ সালের মধ্যে এই মিশন লঞ্চ করা হতে পারে। ভারতও মহাকাশে মানুষ পাঠাতে সক্ষম, সেটা প্রমাণ করাই হবে এই মিশনের প্রধান উদ্দেশ্য। এই মিশনের বাজেট প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা।
নম্বর ৪, লুপেক্স মিশন (LUPEX Mission)
চন্দ্রযান ৩ এর পরে, ভারতের পরবর্তী চন্দ্র মিশন হবে লুপেক্স
(LUPEX) অর্থাৎ লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন। কিছু লোক এটিকে চন্দ্রযান 4 হিসাবেও উল্লেখ করছে, তবে ইসরোর
তরফে এখনও এবিষয়ে চূড়ান্ত কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। লুপেক্স ভারতের ইসরো
(ISRO) এবং জাপানের জাক্সা
(JAXA) অর্থাৎ জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির
(Japan Aerospace Exploration Agency) যৌথ মিশন হবে।
লুপেক্স এর উদ্দেশ্য হল চন্দ্র মেরু অঞ্চলের উপযুক্ততা অন্বেষণ করা, টেকসই কার্যক্রমের জন্য একটি চন্দ্র ভিত্তি স্থাপন করা এবং চন্দ্র ও গ্রহের পৃষ্ঠ অনুসন্ধান প্রযুক্তি যেমন যানবাহন পরিবহন এবং রাত্রে বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতির সন্ধান করা। JAXA একটি রোভার ও লঞ্চ ভেহিকেল প্রদান করবে এবং ISRO এই মিশনের জন্য ল্যান্ডার প্রদান করবে। মজার ব্যাপার হল, রোভারটি শুধুমাত্র ISRO এবং JAXA-এর যন্ত্রপাতি বহন করবে না, এতে NASA এবং ESA-এরও যন্ত্র থাকবে। মনে করা হছহে যে, ২০২৬-২০২৮ সালের মধ্যে এই মিশন লঞ্চ হতে পারে। যখনই এবিষয়ে কোন আপডেট আসবে তখন এই চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করা হবে। তাই চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে পাশের বেল আইকনটি প্রেস করে রাখুন।
নম্বর ৩, শুক্রযান ১ (Shukrayaan 1 Mission)
এটি হবে ভারতের প্রথম শুক্র অভিযান। শুক্র গ্রহ সম্পর্কিত বিভিন্ন অজানা তথ্য খুঁজে বের করাই হবে এই মিশনের প্রধান উদ্দেশ্য। ইসরোর তথ্য অনুজায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে এই মিশন লঞ্চ করা হতে পারে। এই মিশনের জন্য খরচ হতে পারে প্রায় ১৩,৭০০ কোটি টাকা।
নম্বর ২, মঙ্গলযান ২(Mangalyaan 2)
২০১৪ সালে মঙ্গলযান ১ মিশনের সফলতার পর, ইসরো আবার মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। এটি একটি মার্স অরবিটার মিশন হবে। অর্থাৎ মঙ্গলযান ১ এর মতোই এতে একটি অরবিটার থাকবে, কিন্তু কোন ল্যান্দার থাকবে না। ওই অরবিটারে থাকা ক্যমেরার মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহের ছবি তোলা এবং তথ্য সংগ্রহ করাই হবে এই মিশনের প্রধান উদ্দেশ্য। এখনও পর্যন্ত জানা গেছে যে, এই মিশন ২০২৪ সালের শেষের দিকে লঞ্চ হতে পারে।
নম্বর ১, নিসার মিশন (Nisar Mission)
নিসার এর সম্পূর্ণ অর্থ হল, নাসা ইসরো সিনথেটিক অ্যাপারচার র্যাডার। এটি ইসরো এবং নাসার যৌথ মিশন। এই স্যাটেলাইটের ওজন প্রায় ২৮০০ কেজি, যা ইসরো লঞ্চ করবে। এটি একটি আর্থ অবসারভেটরি স্যাটেলাইট, যার প্রধান উদ্দেশ্য পৃথিবীর পরিবর্তিত বাস্তুতন্ত্র, গতিশীল পৃষ্ঠতল, প্রাকৃতিক বিপদ এবং ভূগর্ভস্থ জল সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করা। এই মিশনের বাজেট প্রায় ৭৮৮ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ শে মার্চ এই মিশন লঞ্চ করা হবে।
0 Comments
Post a Comment