বর্তমানে এলিয়েন নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।সবাই জানতে চাই যে, “ভিনগ্রহে প্রাণ আছে কিনা?” বিজ্ঞানীরাও বিশ্বাস করে যে, এলিয়েন আছে। সম্প্রতি একটি বৈজ্ঞানিক দলের গবেষণা থেকে জানা যায় যে, আমাদের গ্যালাক্সিতে প্রায় ৩৬ টি উন্নত এলিয়েন সভ্যতা থাকতে পারে।
এই মহাবিশ্ব বিশাল, এর কোন সীমা
নেই। এখানে অনেক গ্রহ ও নক্ষত্র রয়েছে। তাই হয়তো মহাকাশে পৃথিবীর মতো আরও অনেক গ্রহ
রয়েছে, যেখানে প্রানের অস্তিত্ব থাকতে পারে।
আপনাদের কি মনে হয় এলিয়েন বলে সত্যিই কি কিছু আছে?
পূর্বে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যেগুলো এলিয়েনের অস্তিত্ব প্রমাণ করে এবং আমাদেরকে এলিয়েন বা ইউ এফ ও এর ব্যাপারে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে।১৯৭৮ সালে এরকমই এক রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে একজন বিমানচালক বিমানসহ রহস্যময়ভাবে গায়েব হয়ে গিয়েছিল।
১৯৭৮ সালের ২১ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় ফ্রেডরিক ভ্যালেন্টিচ নামক একজন অস্ট্রেলিয়ান তরুন পাইলট সেসনা ১৮২ এল(Cessena 182 L) নামক ফ্লাইটে ট্রেনিং চলাকালীন অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন।ট্রেনিং চললেও ফ্রেডরিকের প্রায় ১৫০ ঘন্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল।কম বয়সেই তিনি একজন ভালো পাইলট তৈরি হচ্ছিলেন, এমনকি তিনি ক্লাস ফোর ইন্সট্রুমেন্ট রেটিংও পেয়েছিলেন।এর জন্য রাত্রেও তাকে প্লেন চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।সেদিন তিনি মেলবোর্ণ থেকে কিং আইসল্যান্ড এর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।তিনি যখন সুন্দর গতিতে প্লেন চালাচ্ছিলেন তখনই অস্বাভাবিক কিছু তার নজরে আছে, যা দেখে তিনি অবাক হয়ে যান।তিনি দেখেন যে, তার প্লেন থেকে মাত্র ৪৫০০ ফুট দূরে প্লেনের মতো একটি জিনিস উড়ছে। কিন্তু তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, সেটা প্লেন ছিল না।
যখন ওই বস্তুটি তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে, তখন তিনি ঘাবড়ে যান। তারপর কি করবেন বুঝতে না পারে মেলবোর্ন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ করেন।তিনি সবিস্তারে সেই দৃশ্য বর্ণনা করেন। সবকিছু শোনার পর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল জানায় যে, তাদের র্যাডারে এরকম কিছু দেখা যাচ্ছে না, এটা শোনার পর ফ্রেডরিক আরও আতঙ্কিত হয়ে যায়। তখন তার মনে একটাই প্রশ্ন বারবার আসতে থাকে যে, ওটা প্লেন না হলে আসলে কি?
কিছুক্ষণ পর তিনি আবার কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ করেন এবং জানান প্লেনে চারটি আলো জ্বলছে আর এই ধরনের প্লেন সে আগে কখনো দেখেনি। সবকিছু শোনার পর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকেন এবং ধারণা করেন যে, অসম্ভব কিছু ঘটতে চলেছে।তখনই তিনি দেখতে পান ওই প্লেনের মতো বস্তুটি তার পিছু নিয়েছে, যেটা আকারে বড়ো এবং অদ্ভুত ধাতু দিয়ে তৈরি এবং তার মধ্যে একটি বিশাল আকারের সবুজ আলো জ্বলছে।
অবশেষে তিনি ভয়ার্ত গলায় বলেন যে, ওই অদ্ভুত প্লেনটি তার প্লেন থেকে মাত্র হাজার ফুট উঁচুতে রয়েছে। এর পরেই কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বে কন্ট্রোলাররা তার মুখ থেকে যে কথাটি শুনতে পেয়েছিল তা হল, “এটা কোন প্লেন নয়”। তারপর অনেক চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
অবশেষে প্রায় ১০০০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে তদন্ত শুরু হয়। জাহাজের সাথে রয়াল অস্ট্রেলিয়ান এয়ারফোর্স অরিয়ন এয়ারক্রাফট এবং আর ও আরটি সিভিলিয়ানের(RORT Civilian) মাধ্যমে এই তদন্ত অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে হাজার ১৯৭৮ সালের ২৫ শে অক্টোবর এই অভিযান বন্ধ করা হয়। আজও এই রহস্যের সমাধান হয়নি। অনেকে এর জন্য ইউ এফ ও কে দায়ী করেন। অনেকে মনে করেন, এলিয়েনরা ফ্রেডরিকের পিছু নিয়েছিল এবং তারাই তাকে নিয়ে গেছে। এমনকি ফ্রেডরিকের বাবা জানান যে, তিনি এলিয়েন এবং ইউ এফ ও তে বিশ্বাস করতেন।
এই ঘটনার ওপরে হলিউডে একটি সিনেমাও নির্মিত হয়েছে, যার নাম “দা ডিসএপিয়ারেন্স অফ ফ্রেডরিক ভ্যালেনটিচ”।সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ব্রায়ানা বিশপ, ইভান ব্রাদারা, রবার্ট শুক, স্যাম হাওয়ার্ড, পিটার রিচার্ডস এবং পরিচালনা করেছেন লুক রবসন।
এর আই এম ডি বি তে ১০ এর মধ্যে ৯ রেটিং রয়েছে (IMDB rating:- 9/10 )।
0 Comments
Post a Comment