বর্তমানে উন্নত যন্ত্রপাতি ও
প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গ্রহ,উপগ্রহ,নক্ষত্র,গ্রহানু,ব্ল্যাকহোল
ও অন্যান্য মহাকাশীয় বস্তু সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়েছে এবং তাদের রহস্য উদ্ঘাটনে সক্ষম
হয়েছে, যদিও তার পরিমাণ খুবই নগণ্য।কারণ বিশ্বব্রহ্মান্ড বিশাল,এর কোন শেষ নেই।তবে
বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের সৃষ্টির রহস্য সমাধানের জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।এর
সাথেই মানুষের মনে সবসময় একটি প্রশ্ন আসে যে, এই বিশাল মহাবিশ্বে আমরা কি একাই আছি,
নাকি অন্য কোন গ্রহ বা গ্যালাক্সিতে প্রাণ রয়েছে।আর থাকলেও তারা ঠিক কিরকম অর্থাৎ তারা
কিরকম দেখতে, তাদের খাওয়া-দাওয়া, চাল-চলন কি আমাদের মতই এবং তারা কি আমাদের মতই উন্নত
নাকি আমাদের থেকেও উন্নত।এইসব প্রশ্ন বিজ্ঞানীদের মনে ক্রমাগত আসতে থাকে।আর এইসব প্রশ্নের
উত্তর খুঁজতে গিয়েই বিজ্ঞানীদের একটি দল একটি নতুন তথ্য
তাঁদের তথ্য অনুযায়ী আমাদের গ্যালাক্সিতে
প্রায় ৩৬ টি উন্নত এলিয়েন সভ্যতা থাকতে পারে।শুনে অবাক লাগছে তাইতো? তবে অবাক লাগলেও
বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী এটাই সত্যি।আজকে সেই বিষয়েই বিস্তারিত বলা হয়েছে।তবে বিজ্ঞানীরা কিসের ভিত্তিতে এই
তথ্য উপস্থাপন করেছে এবং তাঁরা ঠিক কি বলছেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তথ্যটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করবো।
তো
চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সম্প্রতি অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল
জার্নালের(Astronomical Journal) গবেষণায় জানা গেছে, আমাদের গ্যালাক্সিতে কমপক্ষে ৩৬ টি উন্নত এলিয়েন সভ্যতা
থাকতে পারে।কিন্তু দূরত্তের জন্য অর্থাৎ তারা পৃথিবী থেকে এতটাই দূরে রয়েছে বা আমরা
তাঁদের থেকে এতটা দূরে রয়েছি যে, তাদের খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল এবং বর্তমানে তাদের
অস্তিত্ব আছে কিনা মানে তাদের সভ্যতা এখনও আছে নাকি ধ্বংস হয়ে গেছে সেটা জানাও মুশকিল।
অ্যাস্ট্রোনোমার ফ্র্যাঙ্ক ডেক
এর সমীকরণের মাধ্যমে এই তথ্য উপনীত হয়েছে।তিনি একটি সমীকরণ তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে
জানা যাবে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গাতে কতগুলো সেতি(CETI) অর্থাৎ কমিউনিকেটিং
এক্সট্রা টেরেস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্ট(Communicating Extra Terestrial Intelligent), বাংলায় যার অর্থ অতিরিক্ত পার্থিব বুদ্ধি ও যোগাযোগ
সম্পন্ন সভ্যতা থাকতে পারে।যদিও এই ব্যাপারে অনেক তথ্য এখনও স্পষ্ট নয়।এর জন্য বিজ্ঞানীরা
অন্য সমীকরণ খোঁজার চেষ্টা করছে।
উন্নত এলিয়েন সভ্যতা |
বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে জীবন কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে তার মাধ্যমে তাঁরা আমাদের গ্যালাক্সির অন্যান্য গ্রহে জীবনের সম্ভাবনা খোঁজার চেষ্টা করবেন।তাঁদের মধ্যে একটি দলের মতে জীবন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি হয় ।অর্থাৎ সঠিক পরিস্থিতিতে জীবনের উৎপত্তি হবে।বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সিতে জীবনের কমজোর ও মজবুত সংস্থাপনের জন্য অ্যাস্ট্রো বায়োলজিক্যাল কোপার্নিকান প্রিন্সিপাল(Astro Biological Copernican Principle) তৈরি করেছেন।বিজ্ঞানীদের মতে এই সমীকরণের দ্বারা গ্যালাক্সিতে নক্ষত্রদের নির্মাণ ও তাদের বয়স জানা যেতে পারে এবং এর দ্বারা নক্ষত্রদের উপাদানের ব্যাপারেও জানা যেতে পারে।পৃথিবীর সৃষ্টির ৪.৫ আরব বছর পরে এখানে জীবন সৃষ্টি হয়েছিল।তাই অনেকের মতে কিছু আরব বছর পর কয়েকটি গ্রহে হয়তো জীবনের উৎপত্তি হবে।এ বি সি পি অর্থাৎ অ্যাস্ট্রো বায়োলজিক্যাল কোপার্নিকান প্রিন্সিপাল(Astro Biological Copernican Principle) দ্বারা জানা যায়, পৃথিবীতে যদি বুদ্ধিমান সভ্যতার উৎপত্তি হতে পারে ঠিক সেই ভাবেই গ্যালাক্সির অন্য কোথাও জীবনের উৎপত্তি হতে পারে।বিজ্ঞানীদের মতে, ৩৬ টি সভ্যতার প্রত্যেকের একে অপরের থেকে দূরত্ব প্রায় ১৭ হাজার আলোকবর্ষ হতে পারে।এজন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে সভ্যতাগুলো খুঁজে পাওয়া এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করা অসম্ভব'।
আরেকটি প্রশ্ন হলো এখানে সভ্যতার
সময়কাল কত?
নর্টিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ক্রিস্টোফার কনসিলাসের মতে, উন্নত সভ্যতার খোঁজ পেলে কিভাবে জীবন সৃষ্টি হয়েছিল সেটা জানার সাথে সাথে আমাদের সভ্যতা কতদিন চলবে সেটাও জানা যাবে।এই গবেষণা সবেমাত্র শুরু হয়েছে, তাই এই মুহূর্তে বিজ্ঞানীদের দ্বারা ১০০% সঠিক বলা সম্ভব নয়।কিন্তু ভবিষ্যতে হয়তো তারাই রহস্য ভেদ করতে সক্ষম হবে।তার জন্য আমাদের অনেক অপেক্ষা করতে হবে এবং হয়তো ততদিনে আমাদের মধ্যে কেউই বেঁচে থাকবে না।
আপনাদের কি মনে হয়, পৃথিবী ছাড়াও
গ্যালাক্সির অন্য কোন প্রান্তে প্রাণ থাকতে পারে আর থাকলেও কতগুলো উন্নত সভ্যতা থাকতে
পারে বলে মনে হয়??
আপনাদের মতামত অবশ্যই কমেন্ট
করে জানাবেন।
মহাকাশ সম্পর্কিত খবর গুলো
পাওয়ার জন্য অর্থাৎ মহাকাশ সম্পর্কে সবসময় আপডেটেড থাকার জন্য ডেসক্রিপশনে দেয়া
লিঙ্ক থেকে ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে মহাকাশচারনাকে ফলো করুন।
0 Comments
Post a Comment