চাঁদের বুকে বাড়ি বানাতে চলেছে ইসরো।সম্প্রতি এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

তবে এবিষয়ে পরিকল্পনা চলছে, এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।যদি এটা করা যায়, তাহলে অনেক সুবিধা হবে।তাহলে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা খরচা করে জ্বালানী বয়ে নিয়ে যেতে হবে না।তখন জ্বালানীর সাথে সাথে চাঁদে খাবারও মজুত করে রাখা যাবে।এছাড়া যদি থাকার ব্যাবস্থা করা হয় তাহলে মহাকাশচারীরা সেখানে বিশ্রাম নিতেও পারবেন।তখন মহাকাশযাত্রার ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক তৈরি হবে।

তবে চাঁদে বাড়ি করাটা এখনও গবেষণা স্তরেই আছে।এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা তথা ইসরো(ISRO) এবং মার্কিন মহাকাশসংস্থা তথা নাসা যৌথভাবে পরিকল্পনা করছে।সম্প্রতি এই গবেষণায় ইসরোর সাথে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সিটিউট অফ সায়েন্স(আই আই এস সি) যুক্ত হয়েছে।তাদের যৌথ গবেষণার রিপোর্ট সেরামিক্স ইন্টারন্যাশনাল(Ceramics International) ও প্লস ওয়ান(Plos One) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।


চাঁদে বাড়ি

গবেষকরা জানিয়েছেন, বাঙ্কারের মতো একটা কাঠামো আগে তৈরি করা হবে।আর তার জন্য চাঁদের মাটি ও ব্যাকটেরিয়াদের নিয়ে গবেষণা চলছে।চাঁদের মাটি পৃথিবীর মতো নয়, তাছাড়া চাঁদে বায়ুমণ্ডল নেই।তাই মাটির উপরে বাঙ্কার বানানো অত সহজ নয়।এই বাড়ি বানানোর জন্য যে ইট লাগবে, তা ইউরিয়া দিয়ে তৈরি হবে।ইউরিয়া ও গুয়ার গামের সাহায্যে স্পেস ব্রিক বানানো হবে।গুয়ার গামকে গুয়ারান বলা হয়।এটি একধরনের পলিস্যাকারাইড, যা গুয়ার বীজ থেকে তৈরি হয়।শিল্পকারখানায় এই ধরনের গাম ব্যাবহার করা হয়।

 স্পেস ব্রিকেই শুধু কাজ চলবে না।বিজ্ঞানীরা এমন কিছু ব্যাকটেরিয়াকে বেছে নিয়েছেন, যেগুলো তাদের বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে খনিজ উপাদান তৈরি করবে।এই খনিজ কাঠামো তৈরির কাজে লাগবে।এমনই একটি ব্যাকটেরিয়া হল “স্পোরোসারসিনা পাস্তুরি”।এই ব্যাকটেরিয়া ক্যালসিয়াম কার্বোনেট তৈরি করবে।

ইউরিয়া ও ক্যালসিয়ামের সাহায্যে ইউরিওলাইটিক সাইকেলে ব্যাকটেরিয়াগুলি ক্রিস্টাল তৈরি করবে, যেগুলো কাঠামোর ভিত তৈরির কাজে লাগাবেন বিজ্ঞানীরা।ইসরোর বিজ্ঞানী অর্জুন দে ও আই ভেনুগোপাল বলেছেন,তাঁরা প্রথমে চাঁদের মাটিতে ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে দেবেন।সেখানে তাদের খাবার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ইউরিয়া দেওয়া হবে।তার সাথে মেশানো হবে গুয়ার গাম।বিজ্ঞানীরা বলছেন, সিমেন্টের থেকে অনেক বেশি কার্যকর হবে এই উপাদান।এইভাবে কাঠামো তৈরির পরিকল্পনা চলছে।তবে এখনও পর্যন্ত শুধু গবেষণা চলছে, একে বাস্তবায়িত করা এখনও একটা স্বপ্নের মতো।

তবে আপনাদের কি মনে হয় ভবিষ্যতে চাঁদে বাড়ি বানানো সম্ভব হবে? ইসরো কি পারবে এই স্বপ্ন পূরণ করতে?

আপনাদের মূল্যবান মতামত অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।