দিনেরবেলা আমরা মাথার ওপর সূর্যকে আর রাতেরবেলা আকাশে চাঁদ ও তারাদের দেখতে পাই।প্রাচীনকালে মানুষের অনেক ভুল ধারনা ছিল।মানুষ ভাবতো যে, এই মহাবিশ্ব অতিক্ষুদ্র এবং সৌরজগত ও পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত।কিন্তু ধীরে ধীরে অনেক বিজ্ঞানীর দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টার পর মহাকাশ সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে।তবে এখনও অনেক রহস্য রয়েছে যেগুলো আমাদের কাছে অজানা।সেইজন্য বিজ্ঞানীরা এই রহস্য সমাধানের জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছেন।

গবেষণার ফলে বিজ্ঞানীরা কিছু রহস্যময় গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন।তাদের মধ্যে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ রহস্যময় গ্রহের(5 strangest and most mysterious planet) কথা নিম্নে বলা হল।এসম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই শেষপর্যন্ত পড়বেন।

১)কেপলার- ৪৩২ বি(Keplar 432b):- “কেপলার ৪৩২ বি গ্রহকে ডুম গ্রহও বলা হয়ে থাকে।২০০৯ সালে কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে এই গ্রহকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।এই গ্রহ “কেপলার-৪৩২ এ” নক্ষত্রের চারদিকে পরিক্রমণ করে।পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২৮৩০ আলোকবর্ষ(2830 Lightyears)।এর আকার প্রায় বৃহস্পতি গ্রহের মতো।এই গ্রহের বায়ুমণ্ডল খুবই ভয়ানক এবং ব্যাসার্ধ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী এরফলে গ্রহটি প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর পর ধ্বংস হয়ে যাবে।সেইজন্য গ্রহটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে খুবই রহস্যময়।

২)ওয়াস্প-১৭বি(Wasp-17b):-  এটি একটি বড়ো গ্যাসীয় গ্রহ।২০১৩ সালের ৩ রা ডিসেম্বর গ্রহটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।এই গ্রহ পৃথিবী থেকে ১০০ আলোকবর্ষ(100 Lightyears) দূরে অবস্থিত।এটি এমন একটি গ্রহ, যা তার হোস্ট স্টারের বিপরীত অক্ষে ঘোরে।এটা খুবই রহস্যজনক।তাই এই গ্রহও সম্পর্কে গবেষণা চলছে।

৩)ট্রেস-২বি(TrES-2b):- গ্রহটির ওপর নাম কেপলার-১বি(Keplar-1b)।একে অন্ধকারময়/কালো গ্রহ বলা হয়।২০১১ সালে এই গ্রহটিকে খুঁজে পাওয়া যায়।পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭৫০ আলোকবর্ষ(750 Lightyears)।এটি একটি গ্যাসীয় গ্রহ,যার আকার প্রায় বৃহস্পতি গ্রহের মতো।গ্রহটি তার সূর্য থেকে মাত্র ১% আলো পায়।সেইজন্য এই গ্রহটি এত কালো/অন্ধকারময়।এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা যেসব গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন তাদের মধ্যে এই গ্রহ সবথেকে কালো।এমনকি এটি কয়লার থেকেও কালো।

৪)৫৫ ক্যাঙ্করি-ই(55 Cancri e):- এই গ্রহকে লাভা গ্রহ বলা হয়ে থাকে।পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ(40 lightyears) দূরে অবস্থিত গ্রহটির আকার প্রায় পৃথিবীর দিগুন।নাসার দ্বারা খুঁজে পাওয়া এটি একটি রহস্যময় গ্রহ কারণ, প্রথমে মনে করা হয় যে এই গ্রহে জল রয়েছে।পরে বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই গ্রহে হীরে রয়েছে এবং পরবর্তীকালে জানা যায়, এই গ্রহ আসলে লাভা দ্বারা গঠিত।তারপর থেকেই এই গ্রহটিকে লাভা গ্রহ বলা হয়।গ্রহটি তার নক্ষত্রকে খুব কাছ দিয়ে পরিক্রমণ করে।গ্রহটির যে অংশ সূর্যের সামনে থাকে সেটির উষ্ণতা প্রায় ২৭০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এবং ওপর অংশটির উষ্ণতা থাকে প্রায় ১১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড।এত  তাপমাত্রার কারণ বিজ্ঞানীরা এখনও খুঁজে পাননি।এইজন্য এই গ্রহ নিয়ে গবেষণা চলছে।

৫)কেপলার ৩৬ বি এবং ৩৬ সি(Keplar 36b & 36c):-  এই গ্রহ দুটি খুবই রহস্যময়।৩৬ বি পৃথিবীর তুলনায় ৪.৫ গুন বড়ো একটি পাথুরে গ্রহ।অপরদিকে ৩৬ সি একটি গ্যাসীয় গ্রহ।পৃথিবী থেকে প্রায় ১২০০ আলোকবর্ষ(1200 lightyears) দূরে এই গ্রহদুটি অবস্থিত।এই দুটি গ্রহ একটি তারার কক্ষপথে ঘুরে বেড়ায়, যারা প্রতি ৯৭ দিন অন্তর একে অপরের কাছে আসে।যখন এরা একে অপরের খুব কাছে আসে তখন এদের মধ্যেকার দূরত্ব হয় মাত্র ১.৯ মিলিয়ন কিলোমিটার।

এই ধরনের আরও অনেক রহস্যময় গ্রহ বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে প্রতিনিয়ত গবেষণা চলার পাশাপাশি নতুন গ্রহেরও সন্ধান চলছে।

আপনারা যদি এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে নিম্নে দেওয়া ভিডিওটি দেখতে পারেন।