আপনারা তো প্রায় সবাই জানেন যে, আমাদের সৌরজগতের দুটি প্রধান বেল্ট বা বেষ্টনী রয়েছে – ১) অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট(Asteroid Belt) ও ২) কাইপার বেল্ট(Kuiper Belt)। আর আপনারা সবাই এটাও জানেন যে, সৌরজগতের সমস্ত অ্যাস্টেরয়েড এই অ্যাস্টেরয়েড বেল্টের মধ্যেই উপস্থিত রয়েছে।তবে অ্যাস্টেরয়েড গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত হয়তো অনেকেই জানেন না। যেমন- সৌরজগতের কোথায় এই বেল্ট রয়েছে? অ্যাস্টেরয়েড গুলির আকার কি? কত বছর আগে এই বেষ্টনী আবিষ্কৃত হয়? কে প্রথম এই বেল্ট খুঁজে পেয়েছিলেন? এছাড়া অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য রয়েছে।এগুলো জানতে হলে এবং অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে হলে পুরো লেখাটা পড়ুন।
 

asteroid belt
গ্রহাণু বেষ্টনী 

অ্যাস্টেরয়েডকে বাংলায় গ্রহাণু বলা হয় সুতরাং অ্যাস্টেরয়েড বেল্টের বাংলা অর্থ(Asteroid belt meaning in bengali) হল গ্রহাণু বেষ্টনী।এই বেষ্টনী মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের কখপথের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত রয়েছে(Asteroid belt between Mars and Jupiter)।সৌরজগতের গ্রহ গুলির মতোই গ্রহাণু গুলিও নিয়মিত সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। গ্রহানুগুলি বিভিন্ন আকার ও আকৃতির হয়ে থাকে।তবে এরা গ্রহের তুলনায় আকারে অনেক ছোটো হয়, তাই এদের শূদ্র গ্রহও বলা হয়ে থাকে।গ্রহাণু বেষ্টনীতে হাজার হাজার গ্রহাণু উপস্থিত রয়েছে।গ্রহাণু গুলি ছোটো ধূলিকণা থেকে ১০০০ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।এগুলো পাথর ও ধাতু দ্বারা গঠিত।এই বেষ্টনীতে একটিমাত্র বামন গ্রহ রয়েছে, যার নাম সেরেস।এর ব্যাস প্রায় ৯৫০ কিলোমিটার।আর এই বেল্টের সবথেকে বড়ো তিনটি গ্রহাণু হল ভেস্তা,প্যালাস ও হাইজিয়া, যাদের গড় ব্যাস প্রায় ৬০০ কিলোমিটার।এই বেষ্টনী সূর্য থেকে প্রায় ২.২ – ৩.২ এ ইউ(AU) বা অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট অর্থাৎ ৩২৯-৪৭৮ মিলিয়ন কিলোমিটার দুরত্তের মধ্যে অবস্থিত।বেষ্টনীটি বিশাল অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত, প্রায় লক্ষ মাইলেরও বেশি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত, যা পৃথিবীর পরিধির প্রায় ২৪ গুন বেশি।অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট প্রথম ১৮০১ সালে আবিষ্কৃত হয়, যখন ইটালিয়ান  জ্যোতির্বিজ্ঞানী জিউসেপ পিয়াজ্জি সেরেস নামক বামন গ্রহটি আবিস্কার করেন। সেরেস ছিল এই বেল্টের প্রথম আবিষ্কৃত বস্তু।তাঁর ঠিক ১৫ মাস পরেই প্যালাস নামক গ্রহাণুটি আবিষ্কৃত হয়।পরের কয়েক দশক ধরে আরও অনেক গ্রহাণু খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এবং ১৮৫০ এর দশকে জ্যোতির্বিদরা এই অঞ্চলটিকে গ্রহাণু বেল্ট নাম দিয়েছিলেন।২০০০ সালের মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি গ্রহাণু আবিস্কার করা হয়েছিল।

 
Asteroids
গ্রহাণু বেষ্টনীর গ্রহাণু সমূহ


ছবিতে আপনারা গ্রহাণুগুলিকে খুব কাছাকাছি দেখতে পেলেও আসলে এরা অনেক দূরে অবস্থিত।এমনকি গ্রহাণুগুলি এতোটাই ছড়িয়ে রয়েছে যে, এর মধ্যে দিয়ে মহাকাশযান কোনোরকম সংঘর্ষ ছাড়াই খুব সহজেই যেতে পারে।বেনু গ্রহাণুর কথা তো আপনারা অনেকেই শুনেছেন।বিজ্ঞানীদের ধারনা বেনু গ্রহাণু ভবিষ্যতে পৃথিবীকে ধাক্কা মারতে পারে।সেইজন্য বর্তমানে এই গ্রহাণু নিয়ে অনেক গবেষণা চলছে।আর আপনারা তো প্রায় সবাই এটা জানেন যে, এবছর ২৯ এপ্রিল অর্থাৎ কিছুদিন আগেই ১৯৯৮ ও আর ২(1998 or2) নামক গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে গেছে।এই গ্রহাণু অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট থেকেই এসেছে।এমনকি আজ পর্যন্ত যত গ্রহাণু পৃথিবীর কাছ দিয়ে গেছে সবগুলো এই গ্রহাণু থেকেই এসেছে।
          আরও বিস্তারিত জানতে নিম্নলিখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।

গ্রহাণু বেষ্টনী সম্পর্কে আপনারা যদি আরও কিছু জেনে থাকেন তাহলে কমেন্ট বক্সে শেয়ার করতে পারেন এছাড়া পোস্টটি কেমন লাগলো সেটাও জানাতে পারেন।