কিছুদিন আগেই হাবল টেলিস্কোপ মহাকাশে তার ৩০ বছর পূর্ণ করলো।এই টেলিস্কোপ ৩০ বছর ধরে বিজ্ঞানীদের মহাকাশের ব্যাপারে অনেক তথ্য দিয়েছে।এটি মাধ্যাকর্ষণের আয়ত্তে ভাসমান পৃথিবীর প্রথম দূরবীক্ষণ যন্ত্র এবং মহাকাশে সবচেয়ে দূর পর্যন্ত দেখার জন্য মানুষের তৈরি শ্রেষ্ঠ বীক্ষণ যন্ত্র।
তবে আপনারা কি জানেন টেলিস্কোপটি কতসালে মহাকাশের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল? এর দৈর্ঘ্য এবং ওজন কত? শেষ কোন সালে এর সার্ভিসিং করা হয়েছিল? হাবল টেলিস্কোপ সম্পর্কিত এমন অনেক তথ্য রয়েছে, সেগুলো হয়তো অনেকেই জানে না।তবে চিন্তার কোন কারণ নেই, ৩০ বছর উপলক্ষে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ সম্পর্কিত অজানা তথ্যগুলি বিস্তারিত বলব।
মহাকাশে হাবল টেলিস্কোপ |
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ সংক্ষেপে HST বলা হয়।এটি হল একটি মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র, যা ১৯৯০ সালের ২৪ এপ্রিল মহাকাশের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল। সুতরাং এইবছর ২৪ এপ্রিল সে তার ৩০ বছর সম্পূর্ণ করলো।আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডউইন পি হাবলের নাম অনুসারে এই টেলিস্কোপটির নামকরণ করা হয়েছিল।১৯৯০ সালের ২০ মে এর দ্বারা প্রথম ছবি তোলা হয়।১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসে একে প্রথমবার এবং ২০০৯ সালের মে মাসে একে শেষবার সার্ভিসিং করা হয়।এটি মোট ৫ বার সার্ভিসিং করা হয়।এর দৈর্ঘ্য – ৪৩.৫ ফিট(১৩.২ মিটার), যা প্রায় একটি স্কুল বাসের সমান এবং ওজন(উৎক্ষেপণের সময়) – ১০৮৮৬ কেজি। সর্বোচ্চ ব্যাস – ১৪ ফিট(৪.২ মিটার), গতিবেগ – ২৭৩০০ কিমি/ঘণ্টা।পৃথিবীকে প্রায় ৯৫ মিনিটে পরিক্রমন করে।
এই টেলিস্কোপ
১০-১৫ আলোকবর্ষ পর্যন্ত দেখতে পারে।এতে দুটি ২৫ ফুটের সোলার প্যানেল আছে, যার মাধ্যমে
এটি সূর্য থেকে সক্তি সঞ্চয় করে।এটি গড়ে প্রায় ২১০০ ওয়াট ক্ষমতা ব্যাবহার করে।এতে ছয়টি
নিকেল-হায়ড্রোজেন ব্যাটারী রয়েছে, যার ধারন ক্ষমতা(storage capacity) প্রায় ২২ টি গাড়ির
ব্যাটারীর সমান।
· ১৯৯০ সালে মিশন শুরু হওয়ার পর থেকে হাবল প্রায় ১.৩ মিলিওনেরও বেশি পর্যবেক্ষণ করেছে।হাবলের সংগৃহীত তথ্য(ডেটা) ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ১৫০০০ টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক কাগজপত্র প্রকাশ করেছেন।
· এই টেলিস্কোপটি তারা,গ্রহ বা গ্যালাক্সিতে ভ্রমণ করে না।এটি প্রায় ১৭০০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর ফটো তোলে। এখনও পর্যন্ত এটি পৃথিবীর কক্ষপথ ধরে প্রদক্ষিণ করতে করতে ৪ বিলিয়ন মাইলেরও বেশি পথ অতিক্রম করেছে।
· আপনারা জানলে অবাক হবেন যে, হাবল প্রতিবছর প্রায় ১০ টিবি নতুন ডেটা সংগ্রহ করে।মোট সংরক্ষণাগারটির আকার বর্তমানে প্রায় ১৫০ টিবির বেশি।কারণ ক্যামেরা,লেন্স উন্নত, তাই ভিডিও ও ফটোর সাইজ বেশি।
হাবলের মহাকাশ ভ্রমণ |
· মহাকাশে পাঠানোর সময় ওজন ছিল ২৪০০০ পাউন্ড কিন্তু এখন পৃথিবীতে ফিরে আসলে এর ওজন হবে প্রায় ২৭০০০ পাউন্ড, যা দুটো বড়ো আফ্রিকান হাতির প্রায় সমান।
হাবল টেলিস্কোপ এখনও মহাকাশে অনবরত কাজ করে চলেছে এবং বিজ্ঞানীদের অনেক মূল্যবান তথ্য দিয়ে ছলেছে।
এবিষয়ে আরও কিছু
জানার থাকলে নিম্নিলিখিত ভিডিওটি অবশ্যই দেখবেন এছাড়া কমেন্ট করেও জানাতে পারেন।
0 Comments
Post a Comment