ব্ল্যাক হোলকে বাংলায় কৃষ্ণগহ্বর(Black hole meaning) বলা হয়।ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি এবং বর্তমানে এ বিষয়ে সবারই কৌতুহল রয়েছে।আর বিজ্ঞানীরা এর রহস্য সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে।এই বিষয়ে অনেক ধারনা রয়েছে।এই ধারনা অনুযায়ী, কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু যা এত ঘন সন্নিবিষ্ট বা অতি ক্ষুদ্র আয়তনে এর ভর এত বেশি যে মহাকর্ষীও শক্তি কোন কিছুকে এর ভেতর থেকে বের হতে দেয় না এমনকি তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণকেও(যেমনঃ আলো) নয়।এমনকি এর পাশ দিয়ে যাওয়া যে কোন বস্তুকে এটা নিজের দিকে টেনে নেয়।আসলে এর কম ক্ষেত্রফলে অনেক বেশি ভর নিযুক্ত থাকে এবং এর ঘনত্ব অনেক বেশি হয়।প্রকৃতপক্ষে এই স্থানে সাধারণ মহাকর্ষীয় বলের মান এত বেশি হয়ে যায় যে এটি মহাবিশ্বের অন্য সকল বলকে অতিক্রম করে।অষ্টাদশ শতাব্দীতে প্রথম তৎকালীন মহাকর্ষের ধারণার ভিত্তিতে কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্বের বিষয়টি উত্থাপিত হয়।আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ তথ্য থেকে ব্ল্যাক হোলের ধারণা পাওয়া যায়।যদি কোনো বড় তারার ধ্বংস হয় তাহলে এর থেকে ব্ল্যাক হোল সৃষ্টি হতে পারে।১৯৬৭ সালে আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী জন হুইলার প্রথম "ব্ল্যাক হোল" নাম উপস্থাপন করেন।প্রথমে শুধুমাত্র ধারণা করা হয়েছিল,কিন্তু ১৯৭১ সালে প্রথম ব্ল্যাক হোলকে চিহ্নিত করা হয়।তারপর ১০ এপ্রিল ২০১৯ সালে অর্থাৎ এই বছর ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ(Event Horizon Telescope) এর মাধ্যমে প্রথম ব্ল্যাক হোলের ছবি(Black hole real image) নেওয়া হয়।
- ব্ল্যাক হোলের প্রকারভেদ(Types of Black Hole):
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তিন ধরনের কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল চিহ্নিত করতে পেরেছেন।সেগুলো হলোঃ স্টিলার ব্ল্যাক হোল(Stellar black holes), সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল(Supermassive black holes) এবং ইন্টারমিডিয়েট ব্ল্যাক হোল(Intermediate black holes)।
1. স্টিলার ব্ল্যাক হোল(Supermassive black holes):-
যখন একটি বড় তারার ধ্বংস হয় তখন স্টিলার ব্ল্যাক হোল সৃষ্টি হয়।স্টিলার ব্ল্যাক হোল তার চারপাশে থাকা যেকোন পদার্থ,গ্যাস এবং গ্যালাক্সি-কে নিজের দিকে টেনে নেয়,এরফলে এটি ধীরে ধীরে আরও বড় হতে থাকে।
2. সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল(Supermassive black holes):-
সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল হলো একসাথে অনেকগুলো ছোট ছোট ব্ল্যাক হোলের সমষ্টি।এর জন্য গ্যাসের মেঘ অনেকাংশে দায়ী।এটির বৃহৎ অংশ অন্ধকার পদার্থ(Dark Matter) দিয়ে তৈরি।
3. ইন্টারমিডিয়েট ব্ল্যাক হোল(Intermediate black holes):-
বিজ্ঞানীরা ভাবতো ব্ল্যাক হোল হয়তো বড় হবে না হলে ছোট।কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য থাকে এই ধারণা পাওয়া গেছে যে, মাঝারি সাইজের ব্ল্যাক হোলও হতে পারে, যাকে ইন্টারমিডিয়েট বলা হয়।যদি চেইন রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে কোনো ব্ল্যাক হোল সৃষ্টি হয় তাহলে সেটা হবে ইন্টারমিডিয়েট ব্ল্যাক হোল।
- কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল দেখতে কেমন হয়ঃ
ব্ল্যাক হোলের তিনটে স্তর আছে - আউটার ইভেন্ট হরাইজন(Outer Event Horizon),ইনার ইভেন্ট হরাইজন(Inner Event Horizon) এবং সিঙ্গুলারিটি(Singularity)।"ইভেন্ট হরাইজন" হল ব্ল্যাক হোলের সীমানা।এর মধ্যে থেকে আলো বের হতে পারে না এবং এখানে মহাকর্ষ ধ্রুবক(constant) থাকে।আর যেই অঞ্চলে সমস্ত উপাদানের ভর থাকে সেই অঞ্চলকে সিঙ্গুলারিটি বলা হয়।বিজ্ঞানীরা মহাকাশে যেভাবে গ্রহ,নক্ষত্র ও অন্যান্য পদার্থকে দেখতে পান ব্ল্যাক হোলকে সেইভাবে দেখতে পান না।এর পরিবর্তে বিকিরণের মাধ্যমে এর অস্তিত্ব পান।
"মহাকাশচারনা" ফেসবুক পেজে প্রতিদিন মহাকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন রহস্যময় ও সাম্প্রতিক তথ্য ও ঘটনা পোস্ট দেখতে পাবেন। তাই মহাকাশের রহস্যগুলো সম্পর্কে জানতে "মহাকাশচারনা" ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে সঙ্গে থাকুন ।
ফেসবুক পেজের লিংক 👉 ➡️ Facebook Page
মহাকাশের রহস্যময় ও সাম্প্রতিক তথ্য এবং ঘটনাগুলো সম্পর্কিত প্রতিনিয়ত ভিডিও দেখার জন্য "মহাকাশচারনা" ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।
ইউটিউব চ্যানেল লিঙ্ক 👉 ➡️ YouTube
- কৃষ্ণ গহ্বর(ব্ল্যাক হোল ) সম্পর্কিত ভয়ানক তথ্য(Mysterious facts about Black Hole):
১) যদি কোন ব্যক্তি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে পড়ে যায় তাহলে অতিরিক্ত মহাকর্ষের কারণে প্রথমে তার অনেকটা প্রসারণ হবে, তারপর তার মৃত্যু হবে।অর্থাৎ অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক এবং ভয়ানক মৃত্যু হবে।
২) যদি কোন নক্ষত্র ব্ল্যাক হোলের পাশ দিয়ে যায়, তাহলে এটি পুরোপুরি বিদীর্ণ হয়ে যাবে।
৩) ছোট ব্ল্যাক হোল গুলি বিগ ব্যাং এর পরে সৃষ্টি হয়।
৪) ব্ল্যাক হোল তার চারপাশে থাকা গ্রহ,নক্ষত্র এবং যেকোন পদার্থকে নিজের দিকে টেনে নেয়।
৫) জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন আকাশগঙ্গা ছায়াপথে প্রায় ১০ মিলিয়ন থেকে ১ বিলিয়ন পর্যন্ত স্টিলার ব্ল্যাক হোল থাকতে পারে যাদের ভর সূর্যের প্রায় তিন গুণ।
এই মহাবিশ্বের প্রায় সবকিছুই রহস্যময়।আর ব্ল্যাক হোল হলো এই রকমই একটি বিষয়।ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে এখনো অনেক তথ্য আমাদের অজানা।এ বিষয়ে অনেকের অনেক রকম ধারণা রয়েছে,তবে সেগুলো এখনো প্রমাণিত নয়।কিন্তু বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত এর রহস্য সমাধানের চেষ্টা করছে।
2 Comments
👌🏻👌🏻👌🏻👌🏻👌🏻👌🏻👌🏻
ReplyDeleteWow ..it's amazing ..
DeletePost a Comment